মনিরুজ্জামান,ভূরুঙ্গামারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধিঃ কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীর দুধকুমার নদ ক্রমেই যেন আগ্রাসী হয়ে উঠেছে। দুধকুমার নদের পানি সহনীয় পর্যায় থাকলেও অসহনীয় হয়ে পড়েছে নদী ভাঙন। গত
দুই সপ্তাহের অব্যাহত ভাঙনে উপজেলার পাইকেছড়া , চরভূরুঙ্গামারী ও সোনাহাট ইউনিয়নের প্রায় দুই শতাধিক বাড়িঘর, গাছপালা এবং আবাদি জমি
নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙনের মুখে পড়েছে চর ভূরুঙ্গামারী ইউনিয়নের ঐতিহ্যবাহী ইসলামপুর জামে মসজিদ ,কবরস্থান ও ঈদগাহ মাঠ। গত চার দিনের প্রবল বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলে দুধকুমার নদীর পানি বৃদ্ধির সাথে সাথে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে নদীর ভাঙ্গন। বুধবার (২ অক্টোবর ) বিকালে সরজমিনে উপজেলার চর ভূরুঙ্গামারী ইউনিয়নের ইসলামপুর গ্রামে গিয়ে দেখা যায় গ্রামটিতে যাওয়ার একমাত্র সেমি বাঁধ রাস্তাটির অধিকাংশ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। অন্যদিকে তীব্র ভাঙ্গন অব্যাহত রয়েছে। ভাঙ্গন কবলিতরা তাদের ঘরবাড়ি ভেঙ্গে অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছেন। কেউবা কাটছে
গাছপালা। সেই ফাঁকে উন্মুক্ত আকাশের নীচে খাবার খাচ্ছে কয়েকটি পরিবার। ঐ গ্রামের বাসিন্দা আলাউদ্দিন জানান আমার বসত ভিটা সহ গত তিনদিনে
৬০থেকে ৭০টি পরিবার গৃহহীন হয়েছে। খোঁজ নিয়ে দেখা গেল ইতোমধ্যে বাড়ি ঘর ভেঙ্গে নিয়ে বিভিন্ন স্থানে আশ্রয় নিয়ে মানবেতর জীবন জাপন করছেন তারা। এলাকাবাসী জানান, করাল গ্রাসী দুধকুমারের ভাঙনে প্রতিবছর শত শত পরিবার বসতভিটা, আবাদি জমিন হারিয়ে সর্বশান্ত হয়ে পড়ছে। বিপুল সংখ্যক গৃহহীন পরিবারের পাশে দাঁড়াতে আসছে না কেউ। সরকারিভাবেও তেমন কোন সাহায্য সহযোগিতা কপালে জুটছে না তাদের। ভাঙনে ভূমিহীন পরিবারগুলো অন্যের বাড়িতে কিংবা রাস্তার ধারে মানবেতর জীবন যাপন করছে চরভূরুঙ্গামারী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ফজলুল হক জানান, নদী ভাঙ্গনের বিষয়টি জরুরী ভীত্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য প্রশাসনের কাছে আবেদন জানিয়েছি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার এসএইসএম মাগফুরুল হাসান আব্বাসি জানান, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার গুলোর মাঝে ৩ মেট্রিক টন(জিআর) চাউল বিতরণ করা হয়েছে। নদী ভাঁঙ্গন প্রতিরোধে কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের সঙ্গে যোগাযোগ করে ৫ হাজার ৫শত জিও ব্যাগ এরিমধ্যে ভাঙ্গন কবলিত এলাকায় ফেলানো হচ্ছে,এছাড়া ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে ব্লক দিয়ে বাঁধ নির্মাণ করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
