শ্রীবরদীতে সেই নির্যাতিত গৃহকর্মীর পাশে উপজেলা প্রশাসন

শেরপুরের জেলার শ্রীবরদীতে আওয়ামী লীগ নেতার বাসায় নির্যাতিত সেই গৃহকর্মীর পাশে দাঁড়িয়েছে উপজেলা প্রশাসন। সোমবার (২৮ সেপ্টেম্বর) নির্যাতিত শিশু সাদিয়া উরফে ফেলির পরিবারের হাতে ১৫ হাজার টাকা আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন এবং তাদের পাশে থাকার অঙ্গিকার ব্যক্ত করেন শ্রীবরদী উপজেলা প্রশাসন।

জানা যায়, পৌরশহরের মুন্সীপাড়া এলাকার গ‌রিব কৃষক সাইফুল ইসলামের মেয়ে সাদিয়া পারভিন (১০)। শ্রীবরদী উপজেলা আওয়ামীগের সভাপতি আশরাফ হোসেন খোকার ছেলে; উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবিব শাকিলের বাসায় গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করতো। ওই নেতার স্ত্রী রুমানা জামান ঝুমুর মাঝে মধ্যে সাদিয়াকে নানা অজুহাতে মারধর করতো। এমনকি গরম খন্তি দিয়ে ওই শিশুর মাথায়, পিঠে ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করতো। এতে দগদগে ক্ষত হয় সাদিয়ার শরীরের বিভিন্ন স্থান। গত শুক্রবার সাদিয়াকে মারপিট ও গরম খন্তি দিয়ে আঘাত করলে সে গুরুতর আহত হয়। পরে প্রতিবেশি একজন ৯৯৯ নাম্বারে ফোন করলে পুলিশ পৌর শহরের বিথি টাওয়ারের ৬ তলা বাসা থেকে ওই শিশুকে উদ্ধার করে। রাত দেড়টার দিকে অবস্থার বেগতিক দেখে সাদিয়াকে উপজেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। এতে সাদিয়ার অবস্থার আরো অবনিত হলে তাকে জেলা সদর হাসপাতালে রেফার করা হয়। পরে ওই শিশুকে জেলা হাসপাতাল থেকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু বিভাগে ভর্তি করা হয়। সাদিয়ার বাবা সাইফুল ইসলাম জানান, সাদিয়ার অবস্থা অপরিবর্তিত। সাদিয়া এখন হাসপাতালের শিশু বিভাগে চিকিৎসাধীন। এদিকে পুলিশ অভিযান চালিয়ে ওই আওয়ামী লীগ নেতার বাসা থেকে তার স্ত্রী রুমানা জামান ঝুমুরকে গ্রেফতার করে কোর্টে সোর্পদ করেন। কোর্ট তাকে জেলা হাজতে প্রেরণ করেছে। এসব তথ্য নিশ্চিত করে এ মামলার তদন্তকারী অফিসার এসআই সাইফুল ইসলাম বলেন, এ মামলার তদন্তের প্রয়োজন হলে গ্রেফতারকৃত আসামীর বিরুদ্ধে রিমান্ডের আবেদন করা হবে।

ওই ঘটনাটি গণমাধ্যম ও ফেইসবুকসহ উপজেলার সর্বত্র ঝড় ওঠে। সোমবার উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা পরিষদের পক্ষ থেকে ওই নির্যাতিত শিশুর বাবা সাইফুল ইসলামের হাতে ১৫ হাজার টাকা আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়।
ওই ঘটনাটি জেলা প্রশাসক আনার কলি মাহবুব খোঁজ খবর নিচ্ছেন জানিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার নিলুফা আক্তার জানান, আমরা ওই শিশুর চিকিৎসার জন্যে আর্থিক সহায়তা প্রদান করছি। এ ধরণের বর্বোচিত নির্যাতনের ঘটনায় আমরা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তীব্র নিন্দা জানাই। এ ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি তুলে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এডিএম শহীদুল ইসলাম বলেন, এটি একটি জখন্যতম ঘটনা। উপজেলা পরিষদের পক্ষ থেকে ওই ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানাই। এছাড়াও উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা পরিষদ ওই শিশুর চিকিৎসাসহ আইনি সহায়তা প্রদানে পাশে থাকবে বলে আশ্বস্ত করেন তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *