বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার পর যোগাযোগের ধরন পরিবর্তনে মোবাইল ফোনের ভূমিকা

মো.মনির হোসেন ,মানব জীবনে  প্রতিটি পদক্রমে  বিজ্ঞানের ছোয়া লেগে আছে,বিজ্ঞান আমাদের জীবনকে গতিশীলতা  দান করেছে। মোবাইল ফোন এক সময় আমার আবেগ ও অনুভূতির কেন্দ্রে ছিল।নতুন যেকোন বিষয়ের প্রতি জানতে আমি অনেক আগ্রহ প্রকাশ  করতাম। যখন আমি ক্লাশ পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ি তখনি মোবাইল ফোন সর্ম্পকে নানা কিছু জানতে পারি। আমি যখন কলেজে পড়তাম তখন প্রথম ব্যক্তিগত মোবাইল ফোন হাতে পাই। মোবাইল ফোনের সহায়তায় তখন শুধু কথা বলতাম আর গান শুনতাম এর বেশি কিছু করা সম্ভব তা আমার অজানা ছিল। সে সময়  ফেসবুক ব্যবহার সর্ম্পকে খুব বেশি কিছু জানতাম না, যদিও একজন বন্ধুর সহযোগিতায় ফেসবুক আইডি খুলতে সক্ষম হয়েছিলাম।

মোবাইল ফোন ব্যবহারে আমার যুগান্তকারী পরির্বতন আসে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার পরে, ক্লাসের খবরাখবর জানতে ফেসবুক গ্রুপে সক্রিয় হতে হয় আর সেখান থেকেই ফেসবুক ব্যবহারে খুটিনাটি বিষয় গুলো জানতে শিখি। নিয়মিত মোবাইল ফোন ব্যবহার শুরু করি, মাকে বলে নতুন একটি এনড্রয়েড ফোন কিনতে সক্ষম হয়।

দিন দিন মোবাইল ফোনের প্রতি আর্কষণ সৃষ্টি হচ্ছে, পুরাতন ধ্যান ধারণা গুলো বদলে যেতে শুরু হলো। নানা বিষয় জানতে গুগল ব্যবহার করতে শিখি। তখন থেকেই নানা অজানা বিষয়ে জ্ঞান অর্জন করতে শুরু করি, মোবাইল ফোনের মাধ্যমে যোগাযোগের পরির্বতনে মূল হাতিয়ার ছিল ফেসবুক ও ইন্টারনেট ব্যবহার।

বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম বর্ষে আমার বিভাগের বন্ধুদের সাথে যোগাযোগ করতে আমি মোবাইল ফোন ব্যবহার করি। এখানে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়  হলো আগে আমি কারো সাথে যোগাযোগ করতে তাকে ফোন করতাম, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার সাথে সাথেই রীতিমত তার পরির্বতন ঘটে।

যে কারো সাথে যোগাযোগ করার জন্যে ম্যাসেন্জার ব্যবহার করতাম। যেকোন বিষয় জানতে কাউকে ফোন করার পরির্বতে ম্যাসেজ পাঠাতাম,আর এভাবেই ধীরেধীরে গড়ে উঠে আমার এক নতুন জগৎ।
জানাশোনা ছিল অল্প তাই প্রতিনিয়ত নানা রকম সমস্যার মোকাবেলা করতে হতো,  তবু থেমে থাকিনি প্রতিদিনি নতুন কিছু শিখতাম ।

বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার পর বিভাগের বড় ভাইবোন ও শিক্ষকদের সাথে যোগাযোগ করতে  সরাসরি ফোন করার পরির্বতে ইন্টারনেট ব্যবহার করে ফেসবুকের মাধ্যমে তাদের ম্যাসেজ পাঠানো, এভাবেই এক সময়ের অকল্পনীয় বিষয়গুলো আমার বাস্তবিক ভাবে  পরির্বতন হতে শুরু হয়।

এক কথায় বলতে গেলে আমার যোগাযোগের ক্ষেত্রে আমূল পরির্বতন সাধিত হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিনিয়ত নানা  রকম অনুষ্টান হতো,সেখানে নিজে অংশগ্রহন করতে সক্ষম হলে মোবাইল ফোনে একাধিক  ছবি তুলে ফেসবুকে আপলোড দিতাম। সেই ছবিতে বন্ধুরা  লাইক কমেন্ট করতো। এখানে একটি ছোট বিষয় তাহলো কমেন্ট রিপ্লাই দিতে গিয়ে আবার তাদের সাথে এক ধরনের নতুন যোগাযোগ সৃষ্টি হতো।

সময় মানুষকে নতুন কিছু শেখায়,নানা বিষয়ে ভাবনার জায়গা তৈরি করে দেয়। আমি নতুন ভাবে পথ চলতে শুরু করি,যেকোন  বিষয়ে নূন্যতম জ্ঞান অর্জন করতে ইউটিভের সহায়তা নিতাম এবং সেখানে যেকোন বিষয় সর্ম্পকে জানা অনেক সহজ ছিল। এখানে একটা কথা বলা জরুরি ইউটিভে নানা ব্যক্তির মোটিবেশনাল কথা আমাকে নতুন উদ্যম তৈরি  করতে শুরু করে। এখানে আমি অপরিচিত কারো সাথে কি ভাবে যোগাযোগ  করতে পারি এবং কি ভাবে সহজে তার  সাথে কথা বলতে পারব  এরকম নানা টিপস্ শিখতে পারছি।আর এখানে আমার যোাগাযোগের ধরন পরির্বতন হয়,যেকোন বিষয়ে সাজিয়ে গুচিয়ে কথা বলা শিখতে পারি।

কিছুদিন  আগে মোবাইল ফোন আামার কাছে কথা বলার যন্ত্র মনে হলেও আজ কিন্তু আমার  তা মনে হয়না।যার মাধ্যেমে নিজে  একসময় গান শুনতাম, আজ সেই মোবাইল ফোনের মাধ্যমে আমার নিজের গান অন্যকে শুনাতে পারছি ।আমার অনেক ভাল লাগার বিষয় ছিল মোবাইল ফোনকে ঘিরে, আজ তা পুরোপুরি পূরণ হওয়ার পথে।একটি যন্ত্র আমার জীবনকে এতোটুকু সহজ করে দিতে পারবে,অল্প সময়ে যেকোন কাজ করে দিতে সক্ষম হবে তা হয়তো আমার জানাশোনার বাহিরে ছিল।

আজ যখন বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে তিনটি বছর অতিক্রম হওয়ার পথে এখন যদি যোগাযোগ পরির্বতনে মোবাইল ফোনের  ভূমিকার কথা বলা হয়, সেক্ষেত্রে আমি বলব, অন্যের সাথে  যোগাযোগ করার মূল হাতিয়ার হলো মোবাইল ফোন। অল্প সময়ে যেকোন মানুষের সাথে কথা বলা তা শুধু মোবাইল ফোনের মাধ্যমেই সম্ভব। নিজের বিশ্ববিদ্যালয়ের গন্ডি পেরিয়ে এখন বহিবিশ্বের ছাত্রছাত্রীদের সাথে
যোগাযোগ করতে সক্ষম হয়েছি।

যেকোন তথ্যে জানতে আমরা মোবাইল ফোন ব্যবহার করে থাকি,মোবাইল ফোন আমাদের প্রত্যাহিক যোগাযোগে এক নতুন মাত্রা যোগ  করেছে। আমরা  নতুন নতুন কমিউনিটি গড়ে তুলতে সক্ষম হয়েছি। মোবাইল ফোনের সহযোগিতায় যোগাযোগের সুবির্ধাথে আমার কথা বলার জন্য একাধিক গ্রুপ খুলতে সক্ষম হয়েছি। বর্তমানে আমি মোবাইল ফোনের সহায়তায় একাধিক গ্রুপের সাথে জড়িত রয়েছি।

আমাদের হাই স্কুলের বন্ধুদের মধ্যে  একটি ম্যাসেন্জার গ্রুপের সহায়তায় নতুন একটি কমিউনিটি তৈরী করতে সক্ষম হয়েছি। আগে কলেজে পড়ার সময় ভিডিও চ্যাটিং কি তা জানতাম না। বিশ্ববিদ্যালয় এসে ভিডিও চ্যাটিংয়ের বিষয় জানতে পারি। যা আমার বর্তমান জীবনে যোগাযোগের ক্ষেত্রে নতুন একটি ধারা সৃষ্টি করে। বর্তমানে মোবাইল ফোনের সহায়তায় ভার্চুয়াল যোগাযোগের সাথে সম্পৃক্ত হতে সক্ষম হয়েছি।

সোশ্যাল মিডিয়ার সহায়তায় একটি দেশে আলাদা আলাদা জায়গায় বসবাস করেও একটি সংঘবদ্ধ সংগঠন গড়ে তুলা সম্ভব এবং নিজে সম্পৃক্ত হয়ে যে কোন প্রকার অধিকার আদায় করা সম্ভব তা বুঝে  উঠতে পেরেছি। এখন আমি একসাথে একাধিক মানুষের সাথে সাথে যোগাযোগ করতে পারি। সবশেষে আমি বলতে চাই বর্তমানে মোবাইল ফোন আমার সকল কাজকে সহজ করে দিয়েছে। কম সময়ে বেশি সংখ্যক মানুষের সাথে যোগাযোগ করতে সক্ষম হয়েছি। অনলাইনের সহায়তায় মোবাইল  ফোনের মাধ্যমে যাবতীয় কাজ , বাড়িতে যাওয়ার ট্রেনের টিকেট সংগ্রহ থেকে শুরু করে , খাবার সংগ্রহ সব ধরনের কাজ করতে –সক্ষম হয়েছি,যা একসময় আমার নেটওর্য়াকের বাহিরে ছিল।

মো. মনির হোসেন
গণযোগাযোগ  ও সাংবাদিকতা বিভাগ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *