ঘাটতি পূরণ নয়,সংশোধিত শিক্ষা ব্যবস্থা প্রয়োজন

মো. মনির হোসেন  অল্প কয়েকদিনের মধ্যেই দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হবে।করোনা পূর্ববর্তী শিক্ষা শুধু আমাদের ঘরবন্ধী সময় পার করতে শিখিয়েছে।অর্জিত শিক্ষা বাস্তব জীবনে কাজে লাগিয়ে সকল সমস্যার সুন্দর একটি সমাধান দেওয়া সম্ভব তা আমাদের জানাশোনার বাহিরেই থেকে গেছে।অতিমারী মোকাবেলায় আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা পুরোপুরি ব্যর্থ। তাহলে কি করোনার পূর্ববর্তী ও পরবর্তী শিক্ষা ব্যবস্থার মধ্যে কোন পরিবর্তন হবে না? যেখানে বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থায় একজন শিক্ষার্থী জ্ঞান অর্জনের চেয়ে শতকরা কত নম্বর পেল তার গুরুত্ব বেশি প্রাধান্য পেয়ে থাকে। একজন শিক্ষার্থী শতকরা কত নম্বর পেল তার উপর ভিত্তি করে পরবর্তীতে তার ভর্তি পরীক্ষা, চাকরি, সামাজিক মর্যাদা নির্ধারিত হয়ে থাকে। প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিক পরবর্তী বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত জিপিএ ৫ ও সিজিপিএ ৪ এ কে কত পেল তার উপর ভিত্তি করেই শিক্ষার্থীসহ প্রতিষ্ঠানের সফলতা নির্ণয় করা হয়। এটা কি প্রকৃত সফলতা প্রশ্ন থেকে যায়? ব্যক্তি হিসাবে আপনি হয়তো সফল, একক প্রতিষ্ঠান হিসাবে তার পদমর্যাদা হয়তো বেড়ে গেল এতে সমাজের মানুষের কি লাভ? দিনমজুর থেকে বিত্তবান পর্যন্ত কেউ যখন রেহায় পায়নি ঠিক সেই মুহূর্তে বাংলাদেশের উচ্চ শিক্ষার প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে তাদের কি কোন প্রত্যাশা ছিল না। এতো লম্বা সময় পার হওয়ার পর এখনো কেন করোনা সমস্যায় উপযুক্ত সমাধান বের করা সম্ভব হয়নি।ভ্যাকসিন যা আবিষ্কার হয়েছে তা কতটুকু কার্যকর তা নিয়ে অনেকটা দ্বিধাদ্বন্দ্ব  থেকে যায়। তাহলে কি ধরে নেওয়া হবে উচ্চ শিক্ষার প্রতিষ্ঠানগুলোতে মুখস্থ পাঠ্যসূচী পড়িয়ে ডিগ্রি দেওয়া হয়ে থাকে। যেখানে কে কত বেশি ক্লাশ লেকচার গলদকরণ করে পরীক্ষার খাতায় লিখতে পারছে তার মধ্যেই সীমাবদ্ধ। করোনার পরবর্তী শিক্ষা ব্যবস্থা নিশ্চই ব্যপক পরিবর্তন, পরিমার্জন করে আমাদের সামনে হাজির হওয়া উচিত নয়তো আমরা দিন শেষে আমাদের দেশ পরিচালনায় ব্যবহৃত সিস্টেমকে দোষ দিয়ে যাব। তাই করোনার পরবর্তী শিক্ষা ব্যবস্থা কিছু মৌলিক পরিবর্তন আনা জরুরি তার মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে উপযুক্ত গবেষণাগার গড়ে তুলতে হবে। যেখানে পর্যাপ্ত রেফারেন্স মূলক বই, জার্নাল, পত্র পত্রিকা সংগ্রহশালা থাকবে। গবেষণা বাস্তবে প্রয়োগ করার লক্ষ্যে অত্যাধুনিক ল্যাব সংযোজন করতে হবে। যেখানে শিক্ষার্থী তাদের গবেষণার ফলাফল সঠিকত্ব যাচাই করতে পারবে। শিক্ষক, শিক্ষার্থীদের ভূয়া পিএইচডি ডিগ্রি পরিবর্তে মান সম্মত উচ্চ ডিগ্রি অর্জনের লক্ষ্যে এগিয়ে যেতে হবে। উচ্চ শিক্ষার সিলেবাসগুলোতে মুখস্থ বা গলদকরণ কনটেন্ট এর পরিবর্তে বিজ্ঞান সম্মত আলোচ্যসূচী নির্ধারণ করতে হবে এবং সেই আলোতে দেশ ও জাতিকে আলোকিত করতে হবে।

লেখক ও গণমাধ্যম কর্মী।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *