নওগাঁ ভ্রাম্যমান প্রতিনিধিঃ হাবিবুর রহমান (হাবিব)
নওগাঁর রাণীনগর
নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার কালীগ্রাম ইউনিয়নের ভান্ডারা গ্রামে নিপেন চন্দ্র পাল নামের এক মানসিক রোগীকে প্রায় ৫ বছর যাবত ঘরে বন্দি করে রেখেছে তার পরিবার। এক সময় চিকিৎসা করাতে পারলেও বর্তমানে অর্থাভাবে নিপেনকে মাটির অন্ধকার ঘরে পায়ে শিকল পরিয়ে বেঁধে রাখা হয়েছে। কোনো সুযোগ-সুবিধা না পাওয়ার কারণে গরীব এই পরিবার বর্তমানে মানবেতর জীবন-যাপন করছে। নিপেনের উন্নত চিকিৎসার জন্য সরকারের সহায়তা চেয়েছে তার পরিবার।
জানা গেছে, উপজেলার ভান্ডারা গ্রামের মৃত নরেশ চন্দ্র পালের দ্বিতীয় সন্তান নিপেন চন্দ্র পাল (৪২)। ছোটবেলা থেকে খুবই মেধাবী ছিলেন। স্কুলে পড়ার সময় ১২ বছর বয়সের পর থেকে হঠাৎ করেই নিপেনের মাঝে অস্বাভাবিক আচার-আচরণ লক্ষ্য করে পরিবারের সদস্যরা। এরপর থেকে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন তিনি। গরিব পরিবার হওয়ার পরেও একাধিকবার নিপেনের চিকিৎসা ব্যবস্থা করেছে। কিন্তু বর্তমানে আর্থিক সামর্থ না থাকায় আর চিকিৎসা সেবা তার ভাগ্যে জুটছে না। তাকে বাহিরে ছেড়ে দিলেই মানুষকে মারপিট, গালিগালাজসহ নানা ধরনের অত্যাচার করেন। তাই গত ৫ বছর যাবত নিপেনের পায়ে লোহার শিকল দিয়ে একটি মাটির অন্ধকার ঘরের আটকে রেখেছেন তার পরিবার।
বিয়ে দিলে হয়তো নিপেন ভালো হতে পারে এমন ধারনায় ১৮ বছর আগে তাকে বিয়ে দেওয়া হয়। বিয়ের পর সংসার জীবনে রুপালী (৭) নামের একটি কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। প্রতিবেশীরা বলছে সরকারি কোনো সুযোগ-সুবিধা না পাওয়ায় বর্তমানে মানবেতর জীবন-যাপন করছে এই পরিবার। পরিবারের দাবি, সরকারিভাবে যদি তাকে উন্নত চিকিৎসা দেওয়া হয় হয়তো বা সে সুস্থ হয়ে উঠতে পারে।
নিপেনের বড় ভাই নিতাই চন্দ্র পাল বলেন, ৫ বছর যাতব ভাইকে ঘরে বন্দি করে রেখেছি আমরা। এক সময় চিকিৎসা করতে পারলেও বর্তমানে অর্থের অভাবে আর ভাইয়ের চিকিৎসা করাতে পারছি না। দিন দিন নিপেনের শারীরিক অবস্থা খুবই খারাপ হয়ে যাচ্ছে। অত্যাচার করে দেখে বাধ্য হয়ে পায়ে শিকল পরিয়ে ঘরের মধ্যে আটকে রাখা হয়েছে।
নিপেনের স্ত্রী শিখা রানী পাল বলেন, আগে পাগলামি কম থাকলেও দিন দিন তা বৃদ্ধি পাচ্ছে। অর্থের অভাবে আমার স্বামীর চিকিৎসা করাতে পারছি না। সরকারি ভাবে সহায়তা পেলে উন্নত মানের চিকিৎসা করানো যেতে পারে।
কালীগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম বাবলু বলেন, আমি নিপেনের বিষয়টি শুনেছি। কিন্তু কেউ তার সহযোগিতার জন্য লিখিতভাবে জানায়নি। তবুও আমি তাদের জন্য কিছু করার চেষ্টা করবো।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার আল মামুন বলেন, দ্রুত খোঁজ খবর নিয়ে নিপেনের চিকিৎসার ব্যবস্থা ও তার পরিবারকে সহায়তা করার প্রদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
বার্তা প্রেরকঃ
মো: হাবিবুর রহমান হাবিব)
নওগাঁ (মান্দা)
মোবাইলঃ ০১৭২৬৫৫৯৯২৩
তারিখঃ ২৬/০৯/২০২০ ইং