_________________________
অসীম কুমার, নন্দীগ্রাম (বগুড়া) প্রতিনিধিঃ আজ বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে হিন্দু ধর্মবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব শারদীয়া দুর্গোৎসব। এবার ৩০ হাজার পূজামন্ডবে হয়েছে দুর্গা পূজা। দুর্গা পূজা শরৎ কালে হলেও এবার হয়নি শরৎকালে। মহালয়া থেকে ৩৫ দিন পিছিয়ে হয়েছে এবারের পূজা। কারণ আশ্বিন মাস ছিল মলমাস। হিন্দু শাস্ত্রমতে, কোন মাসে যদি দুটো অমাবশ্যা হয়, তাহলে সে মাস মলমাস হয়। আর মল মাসে হয়না কোন মাঙ্গলিক অনুষ্ঠান। ফলে মহালয়া থেকে ৬ দিন পর পূজা হবার রীতি থাকলেও এবার হয়েছে ৩৫ দিন পর।
শাস্ত্র তথা পঞ্জিকা মতে , ২০২০ সালে মা দুর্গার মর্ত্যে আগমন হয় দোলায় আর গমন গজে। এবারের দুর্গাপূজায় মা আসছেন দোলায় চড়ে। যার ফলে প্রবল মড়ক প্রাক পূজার সময় পর্যন্ত চলবে বলে জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। ফলে পূজার আগ পর্যন্ত প্রবল মহামারীর পরিস্থিতি থেকে যাওয়ার সম্ভবনা প্রবল।
শাস্ত্র মতে বলা হচ্ছে, গজে চড়ে মায়ের গমন শুভ। অর্থাৎ এর ফলে বিশ্বে শুভ কোনও বার্তা নেমে আসবে। গজের গমনে সাধারণত শস্য শ্যামলা বসুন্ধরা হয়। আর এবার তারই প্রভাব পড়তে চলেছে বিশ্বে।
এবারের দুর্গাোৎসব প্রতি বছরের চাইতে আলাদা কারণ, বৈশ্বিক মহামারী করোনার প্রভাব। তাই পূজাকে ঘিরে নেওয়া হয়েছে বাড়তি সতর্কতা। পূজা মন্ডবগুলোতে স্বাস্থ্যবিধি পালনে দেওয়া হয়েছে কঠোর নির্দেশনা। বাতিল করা করা হয়েছে আরতি, কুমারী পূজা, অধিক ভক্ত সমাগম। ফরিদপুর জেলার বোয়ালমারী ও নারায়ণগঞ্জের আড়াই হাজার থানার প্রতিমা ভাংচুর ছাড়া আর কোথাও কোন বিশৃঙ্খলার খবর পাওয়া যায়নি। দু’একটা বিছিন্ন ঘটনা ছড়া সারাদেশে শান্তিপূর্ণভাবে উদযাপিত হচ্ছে এবারের শারদীয়া উৎসব। যার আনুষ্ঠানিকতা শেষ হবে দশমী পূজা শেষে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে। ভক্তরা চোখের জলে বিদায় জানবেন মাকে। আবার অপেক্ষা করবেন আগামী বছরের জন্য। ভক্তদের এবারের প্রার্থনায় বিশেষ স্থান পেয়েছে করোনা ভাইরাস ও সাম্প্রদায়িক অপশক্তি । সকল ভক্তরা কায়মনে প্রার্থনা করছেন করোনা ভাইরাস মুক্ত সুখী,সমৃদ্ধি ও অসাম্প্রদায়িক পৃথিবীর।
শারদাঞ্জলি ফোরাম বগুড়া জেলা শাখার সভাপতি, অসীম মোহন্ত বলেন, এবারের পূজা আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জিং ছিল। একদিকে করোনা ভাইরাসের প্রভাব আর অন্যদিকে সাম্প্রদায়িক অপশক্তি মাথাচাড়া । ফোরামের সারথিসহ , পূজা কমিটির স্বেচ্ছাসেবীরা সবসময় সজাগ ছিলেন। স্বাস্থ্য বিধি মেনে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে পুষ্পাঞ্জলি দেওয়ার জন্য মন্দিরে আগত ভক্তদের অনুরোধ করা হয়েছে। পূজামন্ডবে রাখা হয়েছে হ্যান্ড স্যানিটাইজার, ৩ ঘন্টা পর পর স্প্রে করা হয়েছে জীবাণু নাশক।