ডিপ্রেশন ও আধুনিকতা

আজকাল দেখছি,ডিপ্রেশন একধরনের ফ্যাশান হয়ে গেছে।একটু কিছু হলো আর হুট করে বলে ফেলল যে, আমি ডিপ্রেশনে ভুগছি, বলে বেড়ায়। আসলে তারা ডিপ্রেশনে ভোগা ব্যাক্তি নয়…

কিন্তু আপনি খেয়াল করে দেখবেন, সত্যি যারা ডিপ্রেশনে ভোগে, আর পাঁচ জনের মতন বলে বেড়ায় না, বিষয়টি গোপন রাখে তাদের মতন করে। খুব কাছের দু একজনই তার এ ব্যাপারে জানে…

ডিপ্রেশন থেকে শক্ত হয়ে ওঠা মানুষগুলোকে কখনো সামনে দাঁড়িয়ে কাঁদতে দেখবেন না। বরং, তাদেরকে সারাদিন হাসতে দেখবেন, অন্যকে হাসাতে দেখবেন। আপনার পাশে থেকে আপনাকে সাপোর্ট দিতে দেখবেন, কিন্তু তাকে সাপোর্ট দেওয়ার মতন কাউকে সে খুঁজে পায় না পাশে,নিজেই নিজের সাপোর্ট হয়ে নিজের পাশে দাড়ানোও চেষ্টা করে। জন্ম হয় পর্দার আড়ালের ভিন্ন এক গল্প৷

আমি মনে করি, জীবনে হোঁচট খাওয়াটা খুব দরকার, অন্তত একবার হলেও দরকার । ধাক্কা খেলে মানুষ অনেকটা matured হয় । এটা কথা নয় যে, ধাক্কা খেয়ে matured হয় , আর তা ছাড়া হয় না ?
হ্যাঁ হয় তো,তবুও ভেবে দেখুন একবার। মানুষকে বুঝতে শেখে, কাদের থেকে দূরত্ব বজায় রাখতে হবে তা শিখে নেয়।এরা যদিও আবার হোঁচট খায় তবে আরও শক্ত করে তোলে নিজেকে। প্রাণ খুলে হাসার অভিনয়টা ও পুরো দমে শিখে ওঠে…

নিজেকে পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী মানুষ হিসেবে সবার কাছে নিজের অজান্তেই প্রানোচ্ছল হাসি দিয়ে পরিচয় করিয়ে দিতে জানে।এরা কাঁদে, কিন্তু প্রকাশ্যে নয়, লুকিয়ে লুকিয়ে। গভীর রাতে যখন এদেরকে একাকিত্ব গ্রাস করতে থাকে তখন মানসিক ভাবে আরও বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে এবং মনে মনে বলতে থাকে আর পারছি না…..

এরাই আবার পরের দিনের জন্য নিজেকে তৈরি করে নেয়, উঠে দাঁড়ায় এবং নিজেই নিজেকে বলে তোর জন্য তুই নিজেই আছিস এই আশ্বাস দিয়ে। নিজেকে শক্ত বানিয়ে দিব্বি কাটিয়ে দেয় সময়, প্রতিদিনের মতন কর।
এভাবেই প্রতিনিয়ত নাগরিক জীবনের ভাঙ্গা গড়া আর ঘুরে দাড়ানোর গল্পগুলো চলতে থাকে৷

লিখেছেন – সানজিদা রহমান লুনা
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *