পাড়াগায়ের এক ছনের ঘরেতে
রহিমার আবাস
এইখানেতেই নব্বই টি বছর
করেছে বসবাস।
মনের কোণে ভাসে যখন
সেই সোনালী অতীতের কথা
চোখের সামনে ভেসে উঠে
তার হাজারো স্মৃতির পাতা।
পনের বছর বয়সে যখন
হয়েছিলো তার বিয়ে
সেদিন থেকে বাকি জীবন
তার কেটেছে এইখানে।
স্বামী ছিলো,সংসার ছিলো,
ছিলো আট সন্তান
জীবনের সাথে যুদ্ধ করেছেন
দিয়ে তার জান-প্রাণ।
চৌদ্দ সালে ৮ সন্তান
করেছেন গর্ভে ধারন
যৌবন তার কেটে গিয়েছে
করে সন্তান লালন পালন।
প্রসব বেদনার ব্যথায়
তিনি ক্লিষ্ট ছিলেন ঢের
তথাপি তার ব্যথার কথা
পেতে দিতেন না টের।
শত কষ্টেও সুখেই ছিলেন
বেচেঁ ছিলো যে স্বামী
সেই সুখটাও কেড়ে নিতে দ্বিধা,
করেনি জগতস্বামী।
পৌষের এক শীতের রাতে
ছাড়লেন দুনিয়ার মায়া
চলে গেছেন ফিরবেন না কখনো
পড়ে রইলো শুধু কায়া।
হাজারো কষ্টে একাই মাতা
বড় করেছেন সন্তান
আজকে বুঝি বুড়ো বয়সে
পাচ্ছেন তার প্রতিদান।
ছেলেরা আজ টাকার মালিক,
আছে গাড়ি-বাড়ি
মা’র খবর কেউ রাখেনা,
থাকে অনাহারী।
বৃষ্টির দিনে ছনের ঘরেতে
থাকা ভীষণ দায়
শীতের সময় তার গায়েতে
কাথা কম্বল নাই।
ছেলেরা তার ব্যস্ত থাকে
নিয়ে সন্তান-সখা
ক্ষুধার নিবৃত্তে দিন কাটে মা’র,
প্রায়ই থাকেন ভুখা।
নিজের খাবার নিজেকে
এখনো করতে হয় রান্না
অনেক বছর বেচেঁছেন তিনি
আর বাচিঁতে চান না।
বৃদ্ধা রহিমার মত যেনো
আমাদের মা না হয়
মোবাইল ফোন রেখে
একটু মা’কে দেই সময়।
নামাজ পড়ো,রোজা রাখো,
করো মক্কায় প্রবেশ
মায়ের পায়ের নিচে
কিন্তু সন্তানের বেহেশত।
যত যাই বলি ভাই,
মা বাবার চাইতে
আপন কেহ এই দুনিয়ায় নাই।

কবিতার নাম : প্রতিদান
লেখক : আব্দুল কুদ্দুস
বিভাগ :আন্তর্জাতিক সম্পর্ক
সেশন : ২০১৭-১৮
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়