নিজস্ব প্রতিনিধিঃ বলেশ্বর নদের পদ্মা বেড়িবাঁধের উপরে কুঁড়ে ঘরে অনেক বছর ধরে বসবাস করছেন মানবরু (৬২) ও রশিদ (৭০) দম্পতি। প্রতিনিয়ত ঝড় জলোচ্ছ্বাসের মধ্যেই তাদের বেঁচে থাকা।
বৃহস্পতিবার (২০ আগস্ট) দুপুরে বাঁধের কিছু অংশ ভেঙে গেলে বিপদে পড়েন তারা। মুহূর্তের মধ্যে মানবরু দম্পতির কুঁড়ে ঘরটি ভেঙে যায়। তাদের সহযোগিতায় এগিয়ে তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থী মাইনুল ইসলাম তুহিন। তিনি ওই দম্পতিকে শাড়ি, লুঙ্গি, চাল, ডাল, আলু, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদিসহ এক মাসের বাজার সদায় উপহার দেন। শনিবার (২৯ আগস্ট) সকালে বলেশ্বর নদের পদ্মা বেড়িবাঁধ ভাঙন এলাকায় স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘আস্থা’র সহযোগিতায় কুঁড়ে ঘরে গিয়ে সেই মানবরু দম্পতির হাতে শাড়ি, লুঙ্গি ও খাদ্যসামগ্রী তুলে দেওয়া হয়। মানবরু ও তার স্বামী রশিদ ডাকুয়া কাপড় ও বাজার সদায় পেয়ে খুশি।
কথা হয় মানবরুর সঙ্গে। তিনি বলেন, মোরা অনেক কষ্টে থাহি। জমিজমা যা ছিল সব নদীতে লইয়া গ্যাছে। সিডরের আগে থেকেই ওয়াপদার (বাঁধ) উপরে থাহি। হ্যাও নদীতে ভাইঙ্গা গ্যাছে। ঘরের মাটি ভাইঙ্গা যাওয়ায় ঠিক মতো রান্নাও করতে পারিনা।
বৃদ্ধ রশিদ ডাকুয়া বলেন, দুই বুড়াবুড়ি থাহি, একটা নাতি মিষ্টির দোকানে কাম করে। দুএকদিন পর বাজার সদায় দেয় হেইয়া দিয়া দিন যায়। আমরা এই বাজার সদায় ও কাপড় পাইয়া মহা খুশি।
এ-বিষয়ে তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থী মাইনুল ইসলাম তুহিন বলেন, আমি তাদের দুর্দশার হাল দেখে নিজস্ব অর্থায়নে এক মাসের বাজার সদায়সহ দুজনকে কাপড়-লুঙ্গি দিয়েছি। বেড়িবাঁধের উপরে বসবাস করা অসহায় আরও ২০ জনকে এক মাসের বাজার সদায় দেওয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, আমার “মুখোশ মানব” নামে একটি ইউটিউব চ্যানেল আছে সেটা থেকে এ পর্যন্ত এক লাখ টাকা আয় করেছি। ইউটিউব থেকে আগামীতে যত টাকা আয় হবে তা থেকে অর্ধেক টাকা আমি অসহায়দের মধ্যে বিতরণ করবো।
এ-বিষয় পাথরঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. হুমায়ুন কবির বলেন, পদ্মা বেড়িবাঁধের ভাঙন এলাকায় ক্ষতিগ্রস্তদের ইতোমধ্যেই সরকারিভাবে চাল দেওয়া হয়েছে। ব্যক্তিগত তরফ থেকে মানবরু দম্পতিকে যে অনুদান দেওয়া হয়েছে সেটি অবশ্যই প্রশংসনীয়।